রূপগঞ্জে ৯০ ভাগ শিক্ষার্থী ভার্চূয়্যাল ক্লাসে সচল

রূপগঞ্জ

নিজস্ব প্রতিবেদক: মহামারী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে সারাদেশের মতো নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার সরকারী ১১৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৭ হাজারের অধিক শিক্ষার্থীকে অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে পাঠদানে যুক্ত করেছেন । সরকার তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিক্ষা বাতায়ন নামে বাংলাদেশ সংসদ টিভিতে নিয়মিত শ্রেণি ও বিষয়ভিত্তিক পাঠদান প্রচার করলেও প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক ও অভিভাবকদের নজরদারীর অভাবে শুরুতে অনেকটাই স্থবির শিক্ষা কার্র্যক্রম। তবে নারায়ণগঞ্জ জেলা সরকারী প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে জেলার সকল শিক্ষকদের ভার্চূয়্যাল পাঠদানে যুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। এতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের কঠোর নজরদারী আর অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সহায়ক ভূমিকা হিসেবে মানছেন শিক্ষক নেতারা। রূপগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, বিগত ৪ মাসের অধিক সময় ধরে বন্ধ রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ। বাড়িতে দীর্ঘ সময় অবস্থান করায় শিক্ষার্থীরা হয়ে পড়েছে টিভির বিনোদনমুলক অনুষ্ঠান আর মোবাইল গেইম অপারেটর নির্ভর। তবে অনেক অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের ইন্টারনেটের মাধ্যমে পাঠদান করা কিংবা শিশুদের উপযোগী শিক্ষা দিতেও দেখা গেছে। উপজেলার মঙ্গলখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আব্দুর রহিম মাস্টার বলেন, সরকারী বেতন ভাতা সুবিধা গ্রহণ করে শিক্ষকরা ঘরে বসে থাকবে এটা মেনে নেয়া যায় না। তাই জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে সরকারের শিক্ষা বাতায়নসহ বিভিন্ন ভার্চুয়্যাল ক্লাসে তৎপর রয়েছেন শিক্ষকরা। এতে শিক্ষকদের নিয়ে নিয়মিত জুম মিটিং , অনলাইন পাঠদানে খোঁজ খবর নেয়া, শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে সব অভিভাবক ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত করতে কাজ কাজ করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা বাসায় বসে পরীক্ষা ও অনুশীলনের মাধ্যমে পাঠদান অব্যাহত রাখছে। এ সময় তিনি আরো বলেন, শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির লোকজন টীম করে লেখাপড়ার খোঁজ নিচ্ছে।তবে অভিভাবকরা আরো সচেতন হলেশতভাগ শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাসে যুক্ত করা সম্ভব। সূত্র জানায়, উপজেলার অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো মঙ্গলখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৭৩জন শিক্ষার্থীদের মাঝে অনলাইন প্রশ্ন পাঠিয়ে অভিভাবকদের তত্বাবধানে নিয়মিত পরীক্ষা নেয়া ও শিক্ষকদের বাসায় খাতা পৌঁছে দিয়ে তা মুল্যায়নের ব্যবস্থা নিয়েছেন। এভাবে পিতলগঞ্জ ব্রাহ্মণখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, আগারপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, কামালকাঠি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ প্রায় সবকটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এভাবে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে দেখা গেছে। এদিকে উপজেলার ২ শতাধিক কিন্ডারগার্টেন শিক্ষকরা বেতন ভাতার ব্যবস্থা না থাকায় তাদের শিক্ষার্থীদের খোঁজ খবর রাখতে পুরোপুরি ব্যর্থ রয়েছেন। কারন হিসেবে জানা যায়, করোনা পরিস্থিতিতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতের কারনে কিংবা সব অভিভাবকদের অনলাইন সুবিধা না থাকায় ভার্চ্যুয়ালে যুক্ত করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে রূপগঞ্জ উপজেলা কিন্ডারগার্টেন শিক্ষা উন্নয়ন সমিতির নেতা মনিরুল হক ভুঁইয়া বলেন, সরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের সরকারী সব রকম সহায়তা, বেতন ভাতা , তদারকি , দায়বদ্ধতা থাকায় তারা বাসায় বসে অনলাইনে পাঠদান ও অনেকাংশে শিক্ষার্র্থীদের খোঁজ খবর নিচ্ছেন। বাস্তবে কিন্ডারগার্টেনের সরকারী পৃষ্টপোষকতা না থাকা, অভিভাবকদের সচেতনতা কম থাকা ও এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সুযোগ সুবিধা কম থাকায় সবাই অনলাইনে যুক্ত হতে পারেনি। তবে কিছু প্রতিষ্ঠান যুক্ত রয়েছে বলে দাবী করেন তিনি। রূপগঞ্জ উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আছমাউল হুসনা বলেন, অভিভাবকদের উচিত নিয়মিত তদারকি করে , টিভিতে প্রচারিত ক্লাসে পাঠদানে বাধ্য করা। তাদের বাড়ির কাজ নিজে নিজে মুল্যায়ণ করে তাদের লেখা পড়ায় অভ্যস্ত রাখা। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, শিক্ষকদের নজরদারীর মাধ্যমে সংসদ বাংলাদেশ টিভিতের প্রচারিত ক্লাস বা আইসিটি বিভাগের প্রচারিত অনলাইনে পাঠদানে যুক্ত করেছি। শিক্ষকদের ৫জনের টীম করে এলাকাভিত্তিক রেজিস্ট্রার করে তদারকির নির্দেশও দেয়া হয়েছে। তবে বেসরকারী কিন্ডারগার্টেন এ বিষয়ে পিছিয়ে রয়েছে। তাদের বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান এসব কাজে যুক্ত নয় শুনেছি।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *