এবারও গাজী সেরা

রূপগঞ্জ

নিউজ রূপগঞ্জ ডটকম: দেশের সেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় একের পর এক পুরস্কার পাচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ-১ ( রূপগঞ্জ) আসনের সদস্য সদস্য বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও সেরা করদাতা হয়েছেন তিনি। ২০১৯-২০ করবছরে ব্যক্তিপর্যায়ের সিনিয়র সিটিজেন ক্যাটাগরিতে সেরা করদাতা হয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক।তিনি গাজী গ্রুপের চেয়ারম্যান। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) তার নামের গেজেট প্রকাশ করেছে। বুধবার তা প্রকাশ হয়েছে। একটি সুত্রে জানা গেছে ১০ বার সেরা করদাতা হয়েছে গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক  ।

 প্রসঙ্গত গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক ১৯৪৮ সালের ১৪ আগস্ট বৃহত্তর ঢাকা জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবার নাম গোলাম কিবরিয়া গাজী। মায়ের নাম শামসুনেচ্ছা বেগম। তিনি পড়াশুনা শুরু করেন পুরান ঢাকার বিদ্যাপিঠে। মাধ্যমিক পাস করার পর ভর্তি হন নটরডেম কলেজে। পরে ১৯৬৮ সালে জগন্নাথ কলেজ থেকে স্নাতক পাস করেন। ছাত্র থাকা কালীন সময়ে গোলাম দস্তগীর গাজী আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। ৬ দফা আন্দোলন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০-এর নিবার্চন, ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ এর সব ঘটনায় জীবনবাজী রেখে লড়াই করেছেন তিনি।
ছাত্র অবস্থায় গোলাম দস্তগীর গাজী বঙ্গবন্ধুর ডাকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে। তিনি ২ নং সেক্টরের অধীনে রণাঙ্গণে যুদ্ধ করেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে ঢাকার শহরে প্রধান গেরিলা বাহিনী ক্র্যাক প্লাটুনের অন্যতম কমান্ডার ছিলেন । মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশ সরকার তাকে বীরপ্রতীক খেতাবে ভূষিত করেছে। তিনি ছিলেন গেরিলা যোদ্ধা। তিনি স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২০ গ্রহণ করেছেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে রাজনীতিতে থাকলেও গোলাম দস্তগীর গাজী নিজ বুদ্ধিমত্তা, উদ্ভাবনী চিন্তাশক্তি ও কর্মদক্ষতা কাজে লাগান যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের অবকাঠামো পুনর্গঠনে। ১৯৭৪ সালে দেশের চাহিদার কথা মাথায় রেখে ও দেশের শিল্প খাতকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে প্লাস্টিক ও রাবারজাত পণ্য উৎপাদনকারী কারখানা স্থাপন করেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির উদ্দেশ্যে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। তিনি ১৯৭৭ সালে অনুষ্ঠিত ঢাকা সিটি করর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচনে কাকরাইল, সিদ্ধেশ্বরী, মালিবাগ, মৌচাক, ইস্কাটন ও মগবাজার এলাকা থেকে কমিশনার নির্বাচিত হন।
তিনি এফবিসিসিআইয়ের সহ সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। ক্রীড়া অঙ্গনে গোলাম দস্তগীর গাজীর বিরাট অবদান রয়েছে। তিনি বিসিবির সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। মানবসেবায় বিশেষ অবদানের জন্য গোলাম দস্তগীর গত বছর মাদার তেরেসা পুরস্কার পেয়েছেন। রাজনৈতিক জীবনের বহু চড়াই-উৎরাই পার করা গোলাম দস্তগীর গাজী ৯০-এর দশক থেকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকাবাসীর জন্য কাজ করতে শুরু করেন। ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি জামায়াতের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন। আন্দোলন করতে গিয়ে গোলাম দস্তগীর গাজী গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। তিনি আন্দোলন ছেড়ে যান নাই। তিনি ওয়ান ইলেভেনের সময় কারাবন্দী শেখ হাসিনাকে মুক্তির মহানায়ক ছিলেন। তিনি নেত্রীর জন্য জেল খেটেছেন।

২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ ১ আসনে গোলাম দস্তগীর গাজী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান। সেই নির্বাচনে তিনি বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী কাজী মনিরুজ্জামান কে প্রায় ৫০ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে সবাইকে অবাক করে দেন।
২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হন।তার পদচারণায় বদলে গেছে রূপগঞ্জের উন্নয়ন চিত্র। আওয়ামীলীগ সরকার তিন মেয়াদে রূপগঞ্জের উন্নয়নের জন্য যতগুলো প্রকল্প দিয়েছে তা সফল ভাবে বাস্তবায়ন করেছেন তিনি। তার নামে নেই কোন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী কাজী মনিরুজ্জামান কে ২ লাখের অধিক ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে টানা তৃতীয় বারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর নারায়ণগঞ্জে থেকে আওয়ামী লীগ সরকার প্রথম মন্ত্রী দিয়েছে। বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী হয়েছেন গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক। রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তিনি ।এছাড়া বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন জিটিভি, দৈনিক সারাবাংলার মালিক তিনি। তার বড় ছেলে গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা বর্তমানে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক । তার ছোট ছেলে গাজী গোলাম আশরিয়া বাপ্পী এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক। গোলাম দস্তগীর গাজীর স্ত্রী হাছিনা গাজী তারাব পৌর সভার মেয়র।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *