যারা রাত দেখেনি তারা দিনের মর্ম বুঝে না

নারায়ণগঞ্জ ফিচার

স্বাধীনতা পুরস্কার প্রাপ্ত নারায়ণগঞ্জ -১ ( রূপগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক বলেছেন, কামালপুরে অবস্থিত বকশীগঞ্জে আমার শ্বশুরবাড়ি। আমি যখন শ্বশুর বাড়ি যাই তখন কামালপুরে বড় যুদ্ধ হয়। তখন অনেক মুক্তিযোদ্ধারা আমাকে স্বাগত জানিয়েছিলো। কামালপুর সেক্টর মুক্ত হওয়াতে আমাদের মনোবল বেড়েছিলো। আমি ২ নং সেক্টরের অধীনে ছিলাম মেজর খালেদ মোশারফের আন্ডারে। খালেদ মোশারফের বাড়ি তো জামালপুরে। উনাদের এলাকার একটা সেক্টর কামালপুর। ওখানে অনেক মুক্তিযোদ্ধারা শহীদ হয়েছে। বকশিগঞ্জ এলাকাটা আতঙ্কে ছিলো। পাকিস্তানের সৈন্যরা গ্রামে গ্রামে হানাদিতো। গ্রামবাসীরা আতঙ্কে ছিলো। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা যুদ্ধে যাওয়ার জন্য ডাকদিয়েছিলো। আমরা বঙ্গবন্ধুর ডাকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলাম। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলো বলে বাংলাদেশ স্বাধীন করতে পেরেছি । আর দেশ স্বাধীন হয়েছে বলে আমার মতো অভাগা লোক আজ মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছি। দেশ যদি স্বাধীন না হতো দেশের উন্নয়ন তো দূরের কথা, কোথায় থাকতাম ,কোন অবস্থায় থাকতাম। দেশ স্বাধীন না হলে আমি বড় ব্যবসায়ী হতে পারতাম না।
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্যই আমরা আজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছি। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে আজ আমরা উপযুক্ত জায়গায় নিয়ে যেতে পারছি। শেখ হাসিনার সাহসের কারণেই পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন হচ্ছে। সুতরাং বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যা শেখ হাসিনার জন্য দেশ উপকৃত হয়েছে ,দেশের মানুষ উপকৃত হয়েছে। এমনকি বিরোধী দলও উপকৃত হয়েছে। আমরা সবাই রাজনীতি করতে পারছি। আমরা সবাই স্বাধীনতার সুফল ভোগ করছি।
গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, আমরা স্বাধীনতা ইতিহাসকে জাতির কাছে তুলে ধরব । প্রতিটা জায়গায় প্রতিবছর আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অনুষ্ঠান করতে হবে। আমরা যতবেশি অনুষ্ঠান করতে পারব ততবেশি আমাদের তরুণ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারবে।
তিনি বলেন , পাকিস্তান সামরিক বাহিনী আমাদের অনেক অত্যাচার করেছে। আমরা দেখেছি। যারা রাত দেখেনি তারা দিনের মর্ম বুঝবে না। আমরা রাত দেখেছি বলেই দিনের মর্মটা বুঝতে পারছি। যারা পাকিস্তানের শোষণ ,নির্যাতন ,অত্যাচারের ইতিহাস জানেন না তারা মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জানতে পারবে।
৪ ডিসেম্বর মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রথম বিজয়ের স্মারক “কামালপুর মুক্তদিবস” উদযাপন (২০২০) ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।
জামালপুর জেলা প্রশাসন ও বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শুক্রবার ( ৪ ডিসেম্বর) ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার , ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খাঁন, আবুল কালাম আজাদ এমপি, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মির্জা আজমসহ অনেকে।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *