প্রেসক্লাবের সদস্যরা ভালোও আছে মন্দও আছে: মন্ত্রী গাজী

নারায়ণগঞ্জ শীর্ষ সংবাদ

নিউজ রূপগঞ্জ ডটকম: নারায়ণগঞ্জ-১ ( রূপগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক বলেছেন, বাংলাদেশের নারী নেতৃত্বের অহংকার একটি সিটি করপোরেশনের প্রথম মেয়র ডাক্তার সেলিনা হায়াত আইভী। তিনি আমাদের নারী নেতৃত্বের একটি নিদর্শন। উনাকে দেখে অনেক মহিলা জাগ্রত হয়। অনেক মহিলা উনার কথা বলে। যেহেতু আমার স্ত্রীও একজন মেয়র। তার কাছে গল্প শুনি আমি। আমার স্ত্রী উনাকে দেখে উৎসাহিত হয়েছে। উনি মেয়র হয়েছেন বলেই আমার স্ত্রী উৎসাহিত হয়ে মেয়র হয়ে গেছেন। এই ভাবে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় উনাদের দেখে নারীরা নেতৃত্বে উৎসাহিত হচ্ছে এবং রাজনীতিতে এগিয়ে আসছে।

তিনি বলেন, আমরা নারায়ণগঞ্জ নিয়ে অনেকে কথা বলি। নারায়ণগঞ্জের অনেক সমস্যা আছে। অনেক সময় অনেক সম্মান হানি হয়েছে। আবার সম্মান অর্জনও করেছি। সবকিছু মিলিয়েই আমরা । বাবু ভাই এবং আইভী আপা যে লাইন কথা বলে গেছেন। সে লাইনটা অনেক দুঃখের সাথে কথা বলেছেন উনারা। কারণ ভালো সাংবাদিকও আছে ইয়োলো সাংবাদিকতাও আছে। প্রেসক্লাবের সদস্যরা ভালোও আছে মন্দও আছে। সোমবার ( ৩০ নভেম্বর) বিকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব ভবনের ৬ তলার বীর প্রতীক গোলাম দস্তগীর গাজী ফ্লোর এবং লিফট উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক বলেন , আমরা যারা রাজনীতি করি। যারা রাজনীতির নেতৃত্ব দেই। আমাদেরকে নিয়েই বেশি লেখা হয়। আমাদের সঙ্গে যদি একটি লোকের একটু ধাক্কা লাগে সেটিই নিউজ হয়ে যায়। কিন্তু অনেকে ধাক্কা লেগে কেটে যায় আহত হয় অনেক কিছু করে সেগুলো নিউজ হয় না। আমাদের কারও সঙ্গে কিছু কথা কাটাকাটি হলেই পেপারে চলে আসে।

তিনি বলেন, আমরা যারা রাজনীতি করি তারা ধৈর্য্য ধরি। আপনারা অনেক লেখনি লেখেন আমাদেরকে নিয়ে। অনেক সময় আমরা হেয়পতিপন্ন হই। আমাদের পরিবারের কাছে আমাদের জনগণের কাছে হেয়পতিপন্ন হই। তারপরও আমরা এগুলো নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করি না। ধর্য্য ধরি। কারণ সত্যের জয় সবশেষে হয়। আমরা সত্য পথে থাকলে আমাদের জয় হবেই। সুতরাং কে মিথ্যা বললো কে সত্য বললো সেগুলো না ভেবে আমরা আমাদের পথে এগিয়ে যাব।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীন হয়েছে। আমরা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলাম। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৫ সালে নেমে আসে আমাদের সেই দুর্ঘটনা। ২১ টি বছর আমরা বঙ্গবন্ধুর নাম নিতে পারি নাই। আমরা যারা মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম আমাদের তো কথাই নেই। আমরা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচয় দিতে পারিনি। মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিলে আমাদের উপর জেল জুলুম জরিমানা আসতো। আমাদের মুক্তিযোদ্ধার ছেলে মেয়েরা তখন ভালো লেখা পড়া করতে পারেনি। কারণ মামলা হামলা ‍দিয়ে ব্যস্ত রাখে। কিন্তু সেই ফাঁকে অনেক সুবিধাবাদী লোকেরা অনেক বড় বড় ব্যবসায়ী হয়েছে। বিএনপির সুযোগ সুবিধা নিয়ে , অপরাজনীতির সুযোগ সুবিধা নিয়ে অনেক ব্যবসায়ী অনেক বড় হয়ে গেছেন। আমরা যারা দেশ স্বাধীন করেছিলাম তাদের মধ্যে ৯০ ভাগ লোকেরাই আমরা বড় হতে পারিনি। যারা স্বাধীনতার বিপক্ষে ছিলো তারাই বেশিরভাগ বড় হয়েছে।

গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন , সত্যের জয় সবশেষে হয়। ২১ বছর পর বাংলার জনগণ জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনাকে ১৯৯৬ সালে প্রথম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করেছে। আমরা মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের সম্মান ফিরে পেয়েছি। এরপর ২০০৮ সালে আবার শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে আমাদেরকে জাগ্রত করেছে। আমরা যারা স্বাধীনতা প্রেমী ছিলাম তারা আস্তে আস্তে উন্নয়নের শিখরে চলে যাচ্ছি। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি আমরা এক হয়ে লড়ে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ২১ বছর আমাদের কেউ চেনে নাই। এখন আমাদের সারা পৃথিবীর মানুষ চেনে।

তিনি বলেন, যারা দেশকে ভালোবাসে নাই তারা অর্থনীতি নিয়ে ব্যস্ত ছিলো। কিভাবে অর্থ কামাবে সেটা নিয়েই ব্যস্ত ছিলো। তারা দেশের চিন্তা করেনি।

মন্ত্রী বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা সবাই দেশকে ভালোবাসবো। যারা সাংবাদিকতা করেন তারা সঠিক সাংবাদিকতা দিয়ে আমাদের বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নবাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী যে সব উদ্যোগ নিয়েছেন এবং বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন তার পরিপূর্ণ ইতিহাসটা আপনারা তুলে ধরবেন। আমরা যারা জনপ্রতিনিধি আছি তার পক্ষে কাজ করছি আমাদের সত্যকথাগুলো তুলে ধরলে জনগণ উপকৃত হবে দেশকে ভালোবাসবে।

নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের প্রশংসা করে মন্ত্রী বলেন, আপনেরা নিজেদের অর্থে খুব সুন্দর বসার জায়গা করতে পেরেছেন। জাতীয় প্রেসক্লাব ছাড়া নারায়ণগঞ্জের মতো এত সুন্দর প্রেসক্লাব কোথাও নেই। এসময় মন্ত্রী প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান।

সভায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি এড.মাহাবুবুর রহমান মাসুম সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক সবুজের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডাঃ সেলিনা হায়াত আইভী, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন, পুলিশ সুপার মো: জায়েদুল আলম।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *