ধরা পড়ল রূপগঞ্জের দুই খুনি

ইউনিয়ন চনপাড়া ফিচার শীর্ষ সংবাদ

সিলেটের জাফলংয়ে নৃশংসভাবে খুন হওয়া ট্যুরিস্ট গাইড সাদ্দাম হোসেন হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুইজনকে নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। উদ্ধার করা হয়েছে নিহত সাদ্দাম হোসেনের লুট হওয়া ডিএসএলআর ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন। এক খুনির গেঞ্জির রঙকে ভিত্তি করে তদন্ত চালিয়ে ‘ক্লু লেস’ এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই। 

মঙ্গলবার দুই আসামীকে আদালতে তোলা হলে একজনকে কারাগারে ও অপরজন কিশোর হওয়ায় সংশোধনাগারে পাঠানো হয়। গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলো- নারায়নগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ থানার চনপাড়ার (পুনর্বাসন কেন্দ্র) দীন ইসলামের ছেলে মো. হুমায়ুন (১৫) এবং একই এলাকার মো. সানীর ছেলে মো. সজল (২০)। এর মধ্যে সজল পেশায় বাসের হেলপার ও হুমায়ুন জুতার দোকানের সেলসম্যান। পর্যটকবেশে তারা সিলেট এসেছিল।

সংবাদ সম্মেলন করে পিবিআই সিলেট জেলার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ খালেদ-উজ-জামান জানান, গত ১৫ জুলাই জাফলংয়ের সংরক্ষিত বন এলাকার একটি টিলার উপর নৃশংসভাবে খুন হন গোয়াইনঘাট উপজেলার পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের কালিনগর গ্রামের মৃত হাসেম মিয়ার ছেলে ট্যুরিস্ট গাইড ও ফটোগ্রাফার সাদ্দাম হোসেন (৩০)। এই ঘটনার পর থানা পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই ‘ছায়া তদন্ত’ শুরু করে। হত্যাকাণ্ডের কোন ক্লু না থাকায় তদন্তে বেশ বেগ পেতে হয় পিবিআই সদস্যদের। হত্যাকাণ্ডের দিন সাদ্দামের সাথে দুই যুবককে দেখা গেছে, এর মধ্যে একজনের পরনে ‘অফ হোয়াইট’ গেঞ্জি ছিল- স্থানীয় কয়েকজনের কাছ থেকে কেবল এমন তথ্যই পান পিবিআইর তদন্তকারী দলের সদস্যরা। গেঞ্জির রঙ ধরে তদন্ত করে তারা জানতে পারেন ১৪ জুলাই এক কিশোর ও এক যুবক এসে সিলেটের কদমতলী টার্মিনাল এলাকার হোটেল আল হকে রাত্রিযাপন করেছেন। হোটেলের রেজিস্টারে সজল নিজের নাম সঠিকভাবে লেখালেও হুমায়ূন নিজের পরিচয় দেয় সাগর নামে। পরবর্তীতে প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের চনপাড়া থেকে সজল ও হুমায়ূনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় হুমায়ূনের ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন। জব্দ করা হয় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোরাও। 

গ্রেফতারকৃতদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার মুহাম্মদ খালেদ-উজ-জামান আরও জানান, জাফলংয়ে গিয়ে ছবি তোলার কথা বলে সাদ্দামকে সাথে নেন হুমায়ূন ও সজল। এরপর তারা একটি নির্জন টিলার উপর যান। সেখানে হুমায়ূনের ছবি তোলার সময় সজল পেছন থেকে সাদ্দামের ঘাড়ে ছুরিকাঘাত করে। উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতের এক পর্যায়ে সজলের হাত থেকে ছোরা পড়ে গেলে তুলে এনে হুমায়ূনও ছুরিকাঘাত করে। এরপর ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন নিয়ে তারা পালিয়ে চলে যায় নারায়ণগঞ্জ।  

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *