করোনায় রূপগঞ্জে কিস্তির টাকা আদায় “মরার ওপর খাঁড়ার ঘা”

দুর্ভোগ ফিচার

নিউজ রূপগঞ্জ ডটকম:

করোনা ভাইরাসের ভয়ে প্রশাসনের নির্দেশে চায়-চাকুরী ও ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ থাকলেও বন্ধ হয়নি এনজিওকর্মীদের কিস্তির টাকা নেয়া। এমতাবস্থায়  অসহায় হয়ে পড়েছে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ছোট বড় ব্যবসায়ী ও চাকুরিজীবী। বেশির ভাগ ব্যবসায়ী এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করছে বলে জানা গেছে। সোমবার (২৩ মার্চ) সকালে গোলাকান্দাইল এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খোলামেলা অবস্থায় খিরা বিক্রি করতে। সাংবাদিক বলেন,খোলামেলা অবস্থায় খিরা বিক্রি করছেন প্রশাসন আপনাকে কিছু বলেন না? করোনা ভাইরাসের ভয়ে রাস্তায় খিরা বিক্রি করতে নিষেধ করেছে প্রশাসন তা জানান খিরা বিক্রেতা। খিরা বিক্রেতা আরো জানান, এনজিওকর্মীরা আমাদের কিস্তির টাকা নিতে বাড়িতে এসে বসে আছে। আমরা এখন টাকা কোথায় পাবো? তাই খিরা নিয়ে আবারো গাউছিয়া এলাকায় এসেছি। এভাবে দুঃখের কথাগুলো বলেছেন উপজেলার গোলাকান্দাইল এলাকার এক খিরাই ব্যবসায়ী। খিরা বিক্রেতা আরো বলেন,আমি এনজিও থেকে টাকা তুলে খিরা ব্যবসা শুরু করেছি। এরই মধ্যে করোনা ভাইরাসের কারণে রাস্তায় খিরা বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। এনজিওর লোকজন বলছেন, কিস্তির টাকা দিতেই হবে, মাফ নেই। এদিকে বিছানা পেতে, খাতাপত্র নিয়ে কিস্তির টাকা আদায় করছেন এনজিও সংস্থার মাঠকর্মীরা। আরো একজন ব্যবসায়ী বলেন, মানুষের এখন কাজ নেই। আমরা টাকা দেব কিভাবে। সরকার বাড়িতে থাকতে বলেছে। এনজিওরা কিস্তি আদায় করছে। সরকারের কাছে আপাতত কিস্তি আদায় বন্ধের জন্য অনুরোধ করছি। তবে এসব কিছু মানতে নারাজ এনজিওকর্মীরা। বাংলাদেশ এসোসিয়েশন ফর সোস্যাল এডভান্সমেন্ট (বাসা) নামক একটি এনজিও‘র গোলাকান্দাইল শাখার ম্যানেজার মোঃ আসাদুজ্জামানের সাথে এবিষয়ে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমাদের কিস্তি নেয়া এখনো চলমান রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার সকল ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন সে বিষয়ে সাংবাদিক প্রশ্ন করলে উত্তরে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক বন্ধ হলে আমাদেরটাও বন্ধ হবে। এর আগে আমাদেরটা বন্ধ হবে না। বুরো বাংলাদেশ নামক এনজিও‘র ভূলতা শাখার গোলাকান্দাইল এলাকার অফিসের এক মাঠকর্মী মোসাঃ দুলালী বলেন, আমাদের এনজিও অফিস থেকে এখনও কোনো নির্দেশনা আসেনি। আমাদের কাজ টাকা আদায় করা, আমরা সেটা করছি। নির্দেশনা আসলে বন্ধ করে দেব। বুরো বাংলাদেশ এর ম্যানেজার মোঃ শৈকত বলেন, আজকে পর্যন্ত আমাদের কিস্তি নেওয়া হয়েছে কিন্তু এখন আমরা নির্দেশ পেয়েছি বন্ধ করার তাই আমরা বন্ধ করে দিব। এছাড়াও উপজেলায় আরো অনেক ব্যাংক রয়েছে যা এখনো বন্ধ হয়নি। এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মমতাজ বেগম বলেন, এনজিও পরিচালকদের সঙ্গে আমাদের এখনও চুড়ান্ত মিটিং হয়নি। তবে ইতোমধ্যে এনজিও কর্মীদের জোর করে কিস্তির টাকা আদায় করতে নিষেধ করা হয়েছে। যারা দিতে সমর্থ তারাই কেবল দিবেন। এছাড়া তাদের আপাতত এক মাস কিস্তি আদায় বন্ধ রাখার জন্য বলা হবে শীঘ্রই।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *