এখানে ভাগবাটোয়ারার কিছু নাই : মন্ত্রী গাজী

নারায়ণগঞ্জ ফিচার

নিউজ রূপগঞ্জ ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ ১ আসনের সংসদ সদস্য বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক বলেছেন, শ্রমিকদের অবদানের কথা আমরা ভুলি নাই। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন তোমরা একটি শ্রমিককেও নেগলেট করতে পারবা না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে শ্রমিকদের দায়িত্ব নিয়েছেন। এখানে ভাগবাটোয়ারার কিছু নাই। প্রধানমন্ত্রী সব সময় থাকবেন। তিনি যতদিন বেচে আছেন তিনি ততদিন আমাদের মাঝে থাকবেন। সরকার প্রধান নিজেই শ্রমিকদের দায়িত্ব নিয়েছেন সুতরাং আমার মনে হয় শ্রমিকরা নিরাপদে আছেন ,শান্তিতে থাকবেন।

গতকাল শুক্রবার সকালে সিদ্ধেশরী মন্ত্রীর বাস ভবনে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। পাটকল শ্রমিকদের ‘শতভাগ’ পাওনা বুঝিয়ে দেওয়ার বিষয়ে মন্ত্রী এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
পাটকল শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক বলেন, শ্রমিক ভাইদের দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকতে পারে । অনেকেই মনে করছে কি পামু না পামু তার নাই ঠিক। তাদের এই হতাশা দূর করা হয়েছে। পাটকল শ্রমিকরা যে ভাবে টাকা পাবে তা সরকারের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেউ যদি মোট ১৪ লাখ টাকা পায় নগদ- ৭ লাখ পাবে সঞ্চয়পত্র ৭ লাখ টাকার ( ১১.০৪% তিন মাসে মুনাফা ১৯,৩২০)। ২৪ লাখে নগদ-১২ লাখ পাবে- সঞ্চয়পত্র ১২ লাখ ( ১১.০৪% তিন মাসের মুনাফা ৩৩,১২০)। ৩৮ লাখে নগদ ১৯ লাখ -সঞ্চয়পত্র ১৯ লাখ( ১১.০৪% তিন মাসে মুনাফা ৫২৪৪০)। ৫৪ লাখে নগদ ২৭ লাখ পাবে -সঞ্চয়পত্র ২৭ লাখ( ১১.০৪% তিন মাসে মুনাফা ৭৪৫২০)।
প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের সূত্র ধরে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী আরো জানান যে, মজুরি কমিশন-২০১৫ অনুযায়ী পাটকল শ্রমিকশদের জুন/২০২০ মাসের মজুরি আগামী সপ্তাহে তাদের ব্যাংক হিসাবে পরিশোধ করা হবে। নোটিশ মেয়াদের অর্থাৎ জুলাই-আগস্টের ৬০ দিনের মজুরিও উভয় মাসে যথারীতি পরিশোধ করা হবে। পিএফ, গ্র্যাচুইটি ও গোল্ডেন হ্যান্ডশেক সুবিধাসহ অবশিষ্ট সকল পাওনার ৫০% স্ব স্ব ব্যাংক হিসাবে এবং বাকী ৫০% স্ব স্ব নামে সঞ্চয়পত্র আকারে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে পরিশোধ করা হবে। সব ক্ষেত্রেই মজুরি কমিশন-২০১৫ এর ভিত্তিতেই পাওনা হিসাব করা হবে।
মন্ত্রী জানান, ২০১৪ সাল হতে অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের (৮,৯৫৪ জন) প্রাপ্য সকল বকেয়া, বর্তমানে কর্মরত শ্রমিকদের (২৪,৮৮৬ জন) প্রাপ্য বকেয়া মজুরি, শ্রমিকদের পিএফ জমা, গ্র্যাচুইটি এবং সে সাথে গ্র্যাচুইটির সর্বোচ্চ ২৭% হারে অবসায়ন সুবিধা একসাথে শতভাগ পরিশোধ করা হবে। এজন্য সরকারি বাজেট হতে প্রায় ৫,০০০ কোটি টাকা প্রদান করা হবে। অবসায়নের পর মিলগুলি সরকারি নিয়ন্ত্রণে পিপিপি/যৌথ উদ্যোগ/জি টু জি/ লীজ মডেলে পরিচালনার উদ্যোগ নেয়া হবে। নতুন মডেলে পুন:চালুকৃত মিলে অবসায়নকৃত বর্তমান শ্রমিকেরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজের সুযোগ পাবে। একই সাথে এসব মিলে নতুন কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হবে। সকল শ্রমিককে অবশ্যই পুনর্বাসন করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের জন্য ব্যাংক হিসাব নম্বর অবিলম্বে বিজেএমসিকে জানাতেও অনুরোধ জানান তিনি।

গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে বলেছে গাজী শ্রমিকরা কিন্তু আমাদের লোক। আপনেরা দেখেন প্রধানমন্ত্রীর কত মায়ের মত কণ্ঠ। পিতার মতো তিনি মানুষকে ভালোবাসেন। বিশেষ করে তিনি পাটকে বেশি ভালোবাসেন। এই পাট নিয়ে আমরা এগিয়ে যাবো ইনশাআল্লাহ। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন আমাদের পাটের টাকায় তোমরা করাচি থেকে ইসলামাবাদের উন্নয়ন করেছো। আমার টাকা আমার দেশে থাকবে। বঙ্গবন্ধুর ৬ দফায় পাটের কথা ছিলো। পাটের জন্য শ্রমিকরা বঙ্গবন্ধুর সাথে আন্দোলন করেছে। বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে। শ্রমিকদের জন্য প্রধানমন্ত্রী চোখের পানি ফেলেছে ( কান্না করেছে) তাই শ্রমিকদের পাটকল কোনোদিন আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হতে দেবো না।
তিনি বলেন, শ্রমিক ভাইরা আধেক টাকা নগদ পাবেন। বাকী আধেক টাকা সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে পাবেন। সেটারও মুনাফা পাবেন। শ্রমিকভাইরা টাকা একবারে খেতে পারবে না। তারা ভাঙ্গিয়ে ভাঙ্গিয়ে খাবে। যাতে কোনো শ্রমিক বলতে না পারে এ সরকার আমাদের কি দিয়েছে। এটা প্রধানমন্ত্রীর সঠিক সিদ্ধান্ত। শ্রমিকভাইদের সৌভাগ্য তারা সঞ্চয়পত্র পাচ্ছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
মন্ত্রী আরো বলেন, শ্রম চাহিদা যত বাড়বে, শ্রমিকের মুজুরি ততবাড়বে। পুরনো টেকনোলজি দিয়ে আমাদের কারখানা টিকতে পারবে না। তাই আমাদের পাটকলগুলো আধুনিক করতে হবে। জরুরি সংবাদ সম্মেলনে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান ও একজন শ্রমিক নেতা বক্তব্য রাখেন। এসময় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব লোকমান হোসেন, অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল কালামসহ বিভিন্ন শ্রমিক নেতাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *